https://t.me/DrAkramNadwi/3684
بسم الله الرحمن الرحيم.
❝
আমাদের সম্মানিত বন্ধু ও সঙ্গী ড. রেজা ইসলাম নদভী সাহেব যাকাত সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন পাঠিয়েছেন এবং এই বিষয়ে আমার মতামত জানতে চেয়েছেন। তাঁর অনুরোধের প্রতিক্রিয়ায় নিচে প্রশ্নগুলোর উত্তর উপস্থাপন করা হলো:
|| প্রশ্ন নং ১ :
যাকাত ফান্ড থেকে গরিবদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য বিভিন্ন শিল্প ও কারিগরি শিক্ষা প্রদানের মুনাফাযোগ্য প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা কি বৈধ?
|| উত্তর:
ফুকাহাদের একটি বড় সংখ্যাগরিষ্ঠ মত হলো, গরিবদের যাকাতের মালিক বানানো আবশ্যক। তবে কিছু ফুকাহার মতে, এমন কোনো শর্ত নেই; কেবল এটাই যথেষ্ট যে প্রয়োজনমতো মানুষ যাকাতের সম্পদ থেকে উপকৃত হয়। সুতরাং, যদি গরিবদের কল্যাণে কোনো প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং তার পরিচালকের কাছে যাকাতের অর্থ প্রদান করা হয়, তাহলে এটি বৈধ হবে। এটি প্রথম মতের প্রতিফলনও বহন করে, কারণ পরিচালকের কাছে দেওয়া মানে গরিবদের কাছেই দেওয়া।
এ ধরনের প্রতিনিধিত্ব ইসলামী শরিয়ত এবং অন্যান্য আইনে সাধারণত বৈধ। তবে ভারতীয় উপমহাদেশের মাদ্রাসাগুলোতে প্রচলিত মালিকানা (তামলীক)-এর যে পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, যেমন যাকাতের টাকা কোনো বাচ্চাকে দেওয়া হয় এবং পূর্বনির্ধারিত পরিকল্পনা অনুযায়ী সেই বাচ্চা তা মাদ্রাসায় “উপহার” (হিবা)-এর নামে ফিরিয়ে দেয়, তা আল্লাহর বিধানের প্রতি একধরনের উপহাস এবং ইহুদিদের পদ্ধতির পুনর্জাগরণ। এমন প্রথা থেকে বিরত থাকা উচিত এবং পবিত্র ও প্রজ্ঞাপূর্ণ শরিয়তকে কলুষিত করা উচিত নয়।
এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, একজন গরিবকে স্বাবলম্বী করা এবং তাকে সম্মানজনক জীবিকার উপযুক্ত করে তোলা তার সাময়িক চাহিদা পূরণের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ও উত্তম।
অতএব, যদি যাকাতের অর্থ দিয়ে এমন প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা হয় যেখানে গরিব মানুষ প্রশিক্ষণ নিয়ে বিভিন্ন কারিগরি দক্ষতা অর্জন করতে পারে, যেমন কম্পিউটিং, সেলাইয়ের কাজ, বা অন্য কোনো শিল্প-কারিগরি শিক্ষা, তাহলে এটি তাদের ব্যক্তিগতভাবে যাকাতের অর্থের মালিক বানানোর চেয়ে অনেক বেশি ফলপ্রসূ হবে। এতে উম্মাহ সামগ্রিকভাবে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হবে। এই পদ্ধতিতেই আরব বিশ্ব এবং ইউরোপ-আমেরিকার ফতোয়া বোর্ডগুলো কার্যক্রম পরিচালনা করে।
———-
> মূল :
ড. মুহাম্মাদ আকরাম নদভী, অক্সফোর্ড।
> অনুবাদ যাচাই ও সম্পাদনা :
মাওলানা মারজান আহমদ, সিলেট, বাংলাদেশ।