AkramNadwi

শিরোনাম : বিবাহের পর পুত্রের পিতামাতার সঙ্গে বসবাস

শিরোনাম : বিবাহের পর পুত্রের পিতামাতার সঙ্গে বসবাস।
——- ———-

|| প্রশ্ন:

ড. ফারহাত হাশিমি, যিনি একজন সুপরিচিত শিক্ষিকা ও দাঈ, তাঁর একজন শিক্ষার্থীর প্রশ্ন শেয়ার করেছেন—
আসসালামু আলাইকুম ড. ফারহাত, আপনি ও আপনার পরিবার কেমন আছেন? আশা করি ভালো আছেন।
আমি জানতে চাই, ইসলামের দৃষ্টিতে বিবাহের পর পুত্রের পিতামাতার সঙ্গে বসবাসের হুকুম কী? উত্তম সমাধান কী—স্বতন্ত্রভাবে থাকা, নাকি পিতামাতার সঙ্গে থাকা?

|| উত্তর:

ওয়ালাইকুম সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে বিবাহিত পুত্রের জন্য সবচেয়ে উত্তম হলো স্ত্রীকে একটি স্বতন্ত্র বাসস্থান প্রদান করা—যেখানে না তার নিজের পরিবারের কেউ থাকবে, না স্ত্রীর পরিবারের কেউ। এটি শুধু বাস্তবসম্মতই নয়, বরং ধর্মীয়ভাবেও সমর্থিত একটি নীতি। কেননা, ব্যক্তিগত গৃহ স্ত্রী-র মৌলিক অধিকার হিসেবে বিবেচিত।

দাম্পত্য জীবনে গোপনীয়তা ও স্বতন্ত্রতা নিশ্চিত করা দাম্পত্য সম্পর্ককে সুসংহত করে এবং পারিবারিক জীবনে সম্ভাব্য কলহ-বিবাদ থেকে রক্ষা করে।

রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর সাহাবিদের জীবন থেকেও আমরা এই বিষয়ে স্পষ্ট দিকনির্দেশনা পাই। তারা প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর পিতামাতার বাড়ি ছেড়ে নিজেদের গৃহ স্থাপন করতেন। যেমন, আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাদিয়াল্লাহু আনহুমা) প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর নিজের বাসা ও বিবাহ না হওয়া পর্যন্ত মসজিদে রাত কাটাতেন। এটি প্রমাণ করে যে প্রাপ্তবয়স্ক জীবনে স্বতন্ত্রতা ও আত্মনির্ভরতা কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

শ্বশুরবাড়ি বা পিতৃগৃহে থাকা—অর্থাৎ ছেলে পিতামাতার সঙ্গে কিংবা স্ত্রী তার পিতামাতার সঙ্গে থাকুক—এতে প্রায়শই ভুল বোঝাবুঝি, কলহ বা অপ্রয়োজনীয় উত্তেজনা সৃষ্টি হতে পারে। তাই জোরালোভাবে সুপারিশ করা হয় যে স্বামী-স্ত্রী আলাদা বাসায় বসবাস করুক।

এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখা দরকার—এটি কোনোভাবেই পিতামাতাকে পরিত্যাগ করা বা তাদের প্রতি উদাসীন হয়ে যাওয়া বোঝায় না। ইসলাম দৃঢ় পারিবারিক বন্ধন, সদাচার এবং পিতামাতার প্রতি সহযোগিতাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। আলাদা বাসায় থাকলেও ছেলে যেন নিয়মিত পিতামাতার খোঁজখবর নেয়, তাদের সহায়তা করে ও যত্ন করে—এটি তার দায়িত্ব। একইসঙ্গে সে যেন নিজের নতুন পরিবারকে স্বতন্ত্রভাবে প্রতিষ্ঠা করে।

সারসংক্ষেপে, ইসলামের দৃষ্টিতে সঠিক পথ হলো—পুত্র যেন পিতামাতার প্রতি সম্মান ও দায়িত্ব বজায় রাখে, পাশাপাশি স্ত্রীর জন্য একটি স্বতন্ত্র বাসস্থান প্রদান করে, যাতে গোপনীয়তা, শান্তি ও একটি নতুন পারিবারিক ইউনিটের সঠিক ভিত্তি নিশ্চিত হয়।

——————–

ক্যাটাগরি : ফাতওয়া, পারিবারিক জীবন, উপদেশ।
—-
✍ মূল: ড. মোহাম্মাদ আকরাম নদভী, অক্সফোর্ড।
✍ অনুবাদ যাচাই ও সম্পাদনা : মাওলানা মারজান আহমদ, সিলেট, বাংলাদেশ।
—-
যে আর্টিকেল থেকে অনূদিত, তার লিংক👇
https://t.me/DrAkramNadwi/6730

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *