AkramNadwi

শিরোনাম : প্রত্যুত্তর লেখা—একটি অবরুদ্ধ কাজ ——

শিরোনাম : প্রত্যুত্তর লেখা—একটি অবরুদ্ধ কাজ
——————–

|| প্রশ্ন:

একজন নাদভী ফাজিল আমাকে নিম্নলিখিত বার্তা পাঠিয়েছেন:
“শায়েখ সাহেব! আসসালামু আলাইকুম। কখনো কখনো কিছু মানুষ অভদ্রভাবে আপনার প্রবন্ধের প্রত্যুত্তর লেখেন। যদি আপনি আমাকে বা অন্যান্য কয়েকজনকে অনুমতি দেন, আমরা তা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রত্যুত্তর লিখব।”

|| উত্তর:

প্রিয় ও সম্মানিত ভাই, আসসালামু আলাইকুম ও রহমাতুল্লাহি ও বারকাতহু।

আপনার অনুরোধের জবাবে দু’টি বিষয় তুলে ধরা হলো:

প্রথমত:
আলহামদুলিল্লাহ , আমি নিজেই আমার পক্ষ থেকে প্রতিকার বা প্রতিউত্তর দেওয়ার সক্ষমতা রাখি। তবে কোনো বিশেষ কারণের জন্য সাধারণত আমি তা করি না। অনুগ্রহ করে, আপনি বা অন্য কেউ আমার ভালোবাসা ও শুভেচ্ছার উদ্দেশ্যে এগিয়ে এসে কোনো ধরণের হস্তক্ষেপ করবেন না। যদি আমার কোনো বক্তব্যে ভুল থেকে থাকে, অন্যদের অধিকার আছে তা সংশোধন বা বিতর্ক করার। অতএব, নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে, কেউ আমার পক্ষ থেকে কোনো উত্তর বা প্রত্যুত্তর লেখার অনুমতি পাবে না। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে নেক ও উপকারী কাজ সম্পাদনের তৌফিক দিন।

দ্বিতীয়ত:
প্রত্যুত্তর লেখা একটি নেতিবাচক ও অগঠনমূলক কাজ। সত্যিকারের শুভেচ্ছার পথ হলো—যদি কারো বক্তব্য বা প্রবন্ধে আপনি আপত্তি বোধ করেন, সরাসরি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছে গিয়ে তার বক্তব্যের উদ্দেশ্য বা অর্থ জানার চেষ্টা করা। যেসব তথ্য বা উদ্দেশ্য বোঝার আগে, কোনো ব্যক্তিকে প্রত্যুত্তর লেখা একটি ধ্বংসাত্মক ও অকার্যকর কাজ, যা কোন বরকত বা স্থায়িত্ব বহন করে না।

আজকাল, প্রতিউত্তর লেখা অনেক সময় একটি ফ্যাশন হয়ে গেছে, যা প্রায়ই সময়ের সঙ্গে হারিয়ে যায়। উদাহরণস্বরূপ, আল্লামা শিবলী নোমানির মাওয়াজানা আনিস ওয়া দাবির (موازنهٔ انیس و دبیر)এবং মৌলানা মোদূদীর খিলাফত ও মুলুকিয়ত বইয়ের উপর অসংখ্য প্রত্যুত্তর লেখা হয়েছে, তবে সেই প্রত্যুত্তরগুলো আজ কার্যহীন ও অবরুদ্ধ প্রমাণিত হয়েছে।

““যাকে তুমি গালাগাল দাও, তার জীবন আরও দীর্ঘ হয়;
তোমার হাতে সব কিছু আছে, কিন্তু গালাগাল দেওয়ার পালা এখনো তোমার জন্য বাকি।”

মূল কাজের পথ হলো—যদি কোনো প্রবন্ধ আপত্তিকর মনে হয়, তাহলে সে বিষয়টি নিয়ে ইতিবাচক ও গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে আলোকপাত করা, যাতে আরও ভালো ও উপকারী বিষয়বস্তু সৃষ্টি হয়। এই ধরনের লেখা স্থায়ী ও স্থির হয়, আর আপত্তিকর বিষয়বস্তুর প্রভাব কমে যায়। উদাহরণস্বরূপ, আল্লামা শিবলীর সীরাতুন্নবী, যা মূলত ইউরোপীয় প্রবর্তকদের জবাব, তা প্রমাণ করে যে, নিঃসন্দেহভাবে গঠনমূলক ও বৈজ্ঞানিক প্রত্যুত্তর স্থায়ী ফল দেয়।

আমাদের সম্মানিত বন্ধু, প্রফেসর সেলিম সাহেব, সর্বদা বলেন যে, প্রত্যুত্তর লেখা শুধুমাত্র অকার্যকর ব্যস্ততা, যা সময় নষ্ট করে। যদি সেই সময় গঠনমূলক, বৈজ্ঞানিক ও ইতিবাচক কাজে ব্যয় করা হয়, তা কেবল নিজেকেই নয়, অন্যকেও উপকৃত করে।

———-

ক্যাটাগরি: আখলাক, আত্মশুদ্ধি, ইসলামি চিন্তাধারা।

✍️ মূল রচনা: ড. মুহাম্মদ আকরাম নাদভী, অক্সফোর্ড
✍️ অনুবাদ, যাচাই ও সম্পাদনা: মাওলানা মারজান আহমদ, সিলেট, বাংলাদেশ

🔗 অনূদিত মূল প্রবন্ধের লিংক: 👇
https://t.me/DrAkramNadwi/6778

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *