https://t.me/DrAkramNadwi/5584
بسم الله الرحمن الرحيم.
✍️ লেখক: মোহাম্মদ আকরাম নাদভী, অক্সফোর্ড।
অনুবাদ যাচাই ও সম্পাদনা :
মাওলানা মারজান আহমদ, সিলেট, বাংলাদেশ।
যৌন নির্যাতন :
যৌন নির্যাতন, তা নারী, পুরুষ বা শিশুদের উপর হোক না কেন, শুধুমাত্র আইন দ্বারা প্রতিরোধ করা যায় না। সর্বোচ্চে, আইন সংস্থাগুলি নির্যাতন ঘটার পরে শাস্তি দিতে পারে, কিন্তু তখনও এর মারাত্মক মানসিক ও সামাজিক ক্ষতি হয়ে গেছে।
পাশ্চাত্যের প্রেক্ষাপট :
গত সত্তর বছরে পাশ্চাত্যের সমাজে যৌন আচরণের প্রতি ‘পাপ’ ধারণা ধীরে ধীরে দূর হয়েছে। এই ধারণাটি ‘সম্মতি’ শব্দে রূপান্তরিত হয়েছে, যেখানে ‘ব্যক্তিগত স্বাধীনতা’র অধিকার চর্চা মূল মন্ত্রে পরিণত হয়েছে। শিশুর ক্ষেত্রে, আইনত সম্মতি দেওয়ার ক্ষমতা নেই; কিন্তু প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে সম্মতিমূলক যে কোনও আচরণ আইনের অধীনে সঠিক বিবেচিত হয়।
⚖️ সম্মতি এবং সমস্যা :
এই পদ্ধতির একটি সমস্যা হল, যৌনতা শুধুমাত্র যৌন সম্পর্কের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি আকাঙ্ক্ষার বহিঃপ্রকাশ, যা কখনও কখনও বাহ্যিক প্রভাব ছাড়াই উদ্রেক হতে পারে। বর্তমান যুগে অডিও এবং ভিডিও চিত্রের প্রাচুর্য এই আকাঙ্ক্ষাকে ক্রমাগত সক্রিয় রাখছে।
ধর্মীয় নির্দেশনা :
প্রত্যেক ধর্মীয় ঐতিহ্য যৌন আকাঙ্ক্ষাকে দায়িত্বের সাথে সংযুক্ত করে। এর মাধ্যমে যৌন ইচ্ছাকে পরিবার এবং বিবাহের সাথে সংশ্লিষ্ট করা হয়, যা দীর্ঘমেয়াদি সামাজিক ও মানসিক সহযোগিতার মাধ্যমে স্থিতিশীল হয়।
পশ্চিমা সংস্কৃতি এবং দায়িত্ব :
পশ্চিমা সংস্কৃতি স্বল্পমেয়াদি ব্যক্তিগত ইচ্ছা উদযাপনে উদ্বুদ্ধ করে এবং এটি গর্ভনিরোধ এবং গর্ভপাতের প্রযুক্তিগত অগ্রগতি দ্বারা যৌনতা এবং প্রজননকে আলাদা করেছে।
যৌন আকাঙ্ক্ষার শক্তি :
যৌন আকাঙ্ক্ষা একটি প্রাথমিক প্রয়োজনের ইঞ্জিন, যা প্রজননের প্রয়োজনকে পূরণ করে। এটি এমন একটি শক্তিশালী শক্তি যা জীবনের শুরু থেকে অব্যাহত থাকে এবং বিভিন্ন মানসিক প্রবণতাকে প্রভাবিত করে।
সম্মতির সীমাবদ্ধতা :
যৌন আচরণে সম্মতি সবসময় নির্যাতন বা অন্যায়ের প্রতিরোধে সক্ষম নয়। মানব আচরণে প্রতিযোগিতা, আধিপত্য, এবং ঈর্ষা এই আচরণকে নির্যাতনমূলক ও ধ্বংসাত্মক করে তুলতে পারে।
আত্মনিয়ন্ত্রণের গুরুত্ব :
কোনো বাহ্যিক নিয়ম বা শাস্তি নয়, আত্মনিয়ন্ত্রণের মাধ্যমেই ইচ্ছাকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। ধর্মীয় শিক্ষা আত্মনিয়ন্ত্রণের মূল্যবোধকে উত্সাহিত করে, যা প্রার্থনা এবং সিয়ামের মাধ্যমে পরিপক্ক হয়।
মুসলিমদের দায়িত্ব :
মুসলিমদের উচিত অপরাধীদের নিন্দা করা, নির্যাতিতদের সহায়তা করা এবং প্রয়োজনীয় সেবা প্রদান করা। এ ছাড়া, যৌনতা ও অভিভাবকত্বকে পুনরায় সংযুক্ত করার প্রয়াস চালানো, যেন সমাজে শৃঙ্খলা এবং নৈতিকতার উন্নয়ন ঘটে।
সর্বশেষ কথা :
যৌন নির্যাতন একটি পাপ, আইনগত সংজ্ঞার বাইরে এর নৈতিক মূল্যায়ন অপরিহার্য। মুসলিমদের উচিত পরস্পরকে ধৈর্য ও ধর্মের পথে সাহায্য করা, এবং প্রার্থনা ও সিয়ামের মাধ্যমে আত্ম-নিয়ন্ত্রণ ও সঠিক কাজ করার জন্য অনুপ্রাণিত করা।
উল্লেখ: এই লেখা শুধুমাত্র ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে আলোচনা করেছে এবং এর উদ্দেশ্য সমাজে নৈতিক ও মানসিক সংযোগ প্রতিষ্ঠা করা।