যখন বিমান মাটি ছাড়ে, শহরের আলো ধোঁয়াটে কুয়াশায় মিলিয়ে যায়, পথঘাট আর মানুষ সব এক হালকা পরতের আড়ালে হারিয়ে যায়। তখন অনুভব করি, এ দূরত্ব কেবল দেহের নয়; এ তো হৃদয় আর আত্মার মধ্যকার দূরত্বও। প্রতিটি মুহূর্তে বাতাস, আলো, নীরবতা, আর বিমানের ধাতব কাঁপন আমার অস্তিত্বের প্রতিটি কোণায় গিয়ে আঘাত করে। আমি একসাথে উড়তে থাকি—আমার চিন্তা, স্বপ্ন আর অন্তর্লোকের যাত্রার সাথে।
এই মুহূর্ত, এই ক্ষণ, এই কুয়াশা, এই আলো—সব মিলেমিশে আমাকে শেখায়: প্রকৃত ভ্রমণ মাটিতে নয়, আকাশেও নয়; বরং তা মানুষের হৃদয় আর আত্মার মাঝের দূরত্বেই। যেখানে প্রতিটি উড্ডয়ন একেকটি সুর, প্রতিটি নীরবতা একেকটি দোয়া, আর প্রতিটি মুহূর্ত একেকটি মিলন। আর আমি, এই নীরব উড্ডয়নের শুরুতে, হৃদয় আর আত্মা খুলে দিয়ে উপলব্ধি করি—এটাই সেই সময়, এটাই সেই ক্ষণ, আর এটাই সেই স্থান, যেখানে প্রত্যেক যাত্রা ও প্রত্যেক আগমনের আসল রহস্য লুকিয়ে থাকে।
আমি প্রতিটি মুহূর্তকে অনুভব করি—ডানার কম্পন, মেঘের চাদর, বাতাসের ফিসফিস, আর নিজের হৃদস্পন্দন। প্রতিটি জিনিস যেন একেকটি প্রতীক, প্রতিটি ক্ষণ যেন একেকটি বার্তা, আর প্রতিটি যাত্রা যেন একেকটি আত্মিক ভ্রমণ, যেখানে মাটির শৃঙ্খল নেই, আর আকাশের বিশালতাও কোনো সীমা নয়। আর আমি, এই নীরবতার ভেতরে, নিজের আত্মার উড্ডয়নের প্রথম ঝাঁকুনি অনুভব করি। বুঝতে পারি—এই মুহূর্ত, এই সময়, এই নীরবতাই আমার প্রকৃত গন্তব্য।
জীবনকে বুঝতে হলে চাই দৈনন্দিন অভিজ্ঞতা আর সৃজনশীল দিকের সমন্বয়। কেবল তত্ত্ব বা আবেগ দিয়ে মানুষকে বোঝা যায় না। জীবনে সৃজনশীল প্রক্রিয়া আর নিজেকে বারবার নতুন করে গড়ে তোলার সংগ্রামই মানুষের আসল শক্তি।
——————–
ক্যাটাগরি : ভ্রমণ, ইসলামি চিন্তাধারা, আত্মশুদ্ধি, ফিলোসোফি।
—-
✍️ মূল রচনা: ড. মুহাম্মদ আকরাম নাদভী, অক্সফোর্ড
✍️ অনুবাদ, যাচাই ও সম্পাদনা: মাওলানা মারজান আহমদ, সিলেট, বাংলাদেশ
—-
🔗 অনূদিত মূল প্রবন্ধের লিংক: 👇
https://t.me/DrAkramNadwi/6878