প্রত্যেকে নিজেদের মহল্লার মসজিদে, আধুনিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, কমিউনিটি সেন্টারে—পুরুষদের মধ্যে, নারীদের মধ্যে—দুটি ক্লাস শুরু করুন:
একটি কোরআন শরিফের ক্লাস, আরেকটি সীরাতুন নবীর ক্লাস।
এই দুটোই হিদায়াত ও তৌফিকের খনি, যাদের বিষয়বস্তু পবিত্রতম, যেগুলো বুদ্ধিকে তৃপ্ত করে এবং হৃদয়কে গভীরভাবে প্রভাবিত করে।
কোরআন ও সীরাতের দাওয়াত
কোরআনের দারসে চেষ্টা করুন কয়েকটি আয়াত আরবিতে তিলাওয়াত করতে, তারপর সহজ ভাষায় তার অনুবাদ উপস্থাপন করতে, এবং প্রয়োজনে সামান্য ব্যাখ্যা যোগ করতে। সেসব তাফসির অধ্যয়ন করুন, যেগুলো আধুনিক মানুষের মানসিকতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে লেখা হয়েছে। আরবিতে শহীদ সাইয়্যেদ কুতুবের ফি যিলালিল কুরআন, আর উর্দুতে তাদাব্বুরে কুরআন ও তাফহীমুল কুরআন এ ব্যাপারে আপনাদের সহায়ক হবে। এসব তাফসির থেকে উপকৃত হলে সহজেই কোরআনের বার্তা সাধারণ মানুষের কাছে প্রভাবশালী ভঙ্গিতে পৌঁছে দিতে পারবেন।
সীরাতের ক্ষেত্রে আপনার প্রতিষ্ঠান যতটা কাজ করেছে, অন্য কেউ ততটা করতে পারেনি। মাওলানা আবুল হাসান আলী নাদভীর নবী রহমত, সাইয়্যেদ সুলায়মান নাদভীর খুতবাতে মাদরাস, আর শিবলী ও সুলায়মান নাদভীর যৌথ রচনা সীরাতুন্নবী অধ্যয়ন করুন। এগুলোর আলোকে রাসুলুল্লাহ ﷺ–এর প্রতি ভালোবাসা ও আনুগত্য মুসলমানদের হৃদয়ে স্থাপন করুন।
এ ভেবে নিরুৎসাহিত হবেন না যে, পরিস্থিতি এত সংকটময়—আমাদের এসব দারস দিয়ে কী পরিবর্তন হবে? এটাই শয়তানের এক বড় ফাঁদ। এর থেকে সতর্ক থাকুন। আপনার সাধ্যানুযায়ী চেষ্টা চালিয়ে যান, আল্লাহর কাছে সাহায্য চান। তারপর আল্লাহর এমন সহায়তা আসবে, যা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না।
এই দুটি দারস—কোরআন ও সীরাত—মানুষকে ঘুম ভাঙাবে, স্বভাব-চরিত্র বদলে দেবে, ব্যক্তি ও সমাজে অসাধারণ পরিবর্তন আনবে, বান্দাদের রবের কাছাকাছি করবে, আর সবার জীবনকে সুন্নাতে নববীর সৌন্দর্যে সাজিয়ে তুলবে।
“মজা আসে আল্লাহর কথা বলায়,
আর মন ভরে যায় যখন হয় প্রিয় নবীর কথা।”
এই দুনিয়া স্থায়ী নয়। এখানে না কারও টিকে থাকার জায়গা আছে, না চিরস্থায়ী শান্তি। এটি কেবল চলে যাওয়ার জায়গা, ত্যাগ করার জায়গা। এখানে না আকৃষ্ট হওয়ার কিছু আছে, না আঁকড়ে ধরার কিছু। মৃত্যুর আগে সেই প্রভুকে সন্তুষ্ট করে নিন, যাঁর কাছে প্রত্যাবর্তন অবধারিত।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে নেক বানাক এবং তাঁর দ্বীনের খেদমতের জন্য কবুল করে নিন। আমিন।
——————–
ক্যাটাগরি : নসিহত, কোরআন, সিরাত, আত্মশুদ্ধি।
—
✍️ মূল রচনা: ড. মুহাম্মদ আকরাম নাদভী, অক্সফোর্ড
✍️ অনুবাদ, যাচাই ও সম্পাদনা: মাওলানা মারজান আহমদ, সিলেট, বাংলাদেশ
—
🔗 অনূদিত মূল প্রবন্ধের লিংক: 👇
https://t.me/DrAkramNadwi/6934