https://t.me/DrAkramNadwi/5646
بسم الله الرحمن الرحيم.
রবিবার, ১৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
✍️ লিখেছেন : ড. মুহাম্মদ আকরাম নদভী, অক্সফোর্ড।
অনুবাদ যাচাই ও সম্পাদনা :
মাওলানা মারজান আহমদ, সিলেট
| উদ্বোধনী সেশন ও গবেষণা উপস্থাপনা :
সকাল দশটায় প্রবন্ধ উপস্থাপনার প্রথম সেশন শুরু হয়। পুরো পরিবেশ ছিল উদ্দীপনা ও প্রত্যাশায় ভরা। সেশনের সূচনা করেন ইউরোপীয় কাউন্সিলের সেক্রেটারি জেনারেল সম্মানিত শাইখ হুসাইন হালাওয়া। তিনি আলোচনার বিষয়গুলোর গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে একটি পরিষ্কার দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন, যা সাধারণ লক্ষ্যগুলো অর্জনে সহায়ক হবে। শাইখ হুসাইন সুনির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক দিকগুলোতে মনোযোগ দেওয়ার এবং গবেষণা উপস্থাপনা ও আলোচনার সময় গঠনমূলক সংলাপ বজায় রাখার আহ্বান জানান।
এরপর তিনি একটি বিশেষ কমিটি গঠনের ঘোষণা দেন, যা চূড়ান্ত প্রতিবেদন এবং সুপারিশগুলো তৈরি করবে, যা সম্মেলনের শেষে উপস্থাপিত হবে। এই কমিটিতে বিশিষ্ট গবেষকরা অন্তর্ভুক্ত ছিলেন, যার একজন সদস্য এই লেখক নিজেই। এই দায়িত্ব গ্রহণে তিনি নিজেকে গর্বিত মনে করেন। এই কমিটি আলোচনাগুলোকে নথিবদ্ধ করার পাশাপাশি এমন সুপারিশমালা তৈরি করবে, যা সম্মেলনের লক্ষ্যে পৌঁছাতে সহায়ক হবে।
| উপস্থাপিত গবেষণাপত্রগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল:
> ড. সুফাইব হাসানের “ইউরোপে মুসলমানদের ভবিষ্যৎ: ধারণা ও চ্যালেঞ্জ”
> ড. তাহের মাহদির “মুসলমানদের সভ্যতাগত বার্তা”
> এই লেখকের “ধর্ম সংরক্ষণের উদ্দেশ্য নিয়ে একটি তাত্ত্বিক দৃষ্টিভঙ্গি”।
| সকালের দ্বিতীয় সেশনে উপস্থাপিত হয় :
ড. আকরাম কিলিসের “নবমুসলিমদের ইসলামের সাথে পরিচিতি, ইসলামী পরিচয় গঠন ও সংরক্ষণে ইসলামী সমাজের দায়িত্ব”,
ড. আলি কারা দাঘির “ধর্ম ও ধার্মিকতা সংরক্ষণে নির্দেশনা ও নিষেধাজ্ঞার পদ্ধতি”, যেখানে তিনি উল্লেখ করেন যে, পদ্ধতিগত উন্নতি বিশ্বে এবং উন্নত দেশগুলোতে সফলতার মূল চাবিকাঠি হয়েছে। তিনি বলেন, ইসলামও এই পদ্ধতিগত দৃষ্টিভঙ্গিকে অগ্রগণ্য করেছে। কুরআন স্পষ্ট করেছে যে, প্রত্যেক ধর্ম, ব্যবস্থা এবং জাতির নিজস্ব পদ্ধতি ও আইন রয়েছে।
| বিকেলের সেশনগুলোতে উপস্থাপিত হয় :
> শাইখ ড. হুসাইন হালাওয়ার “সঠিক ধর্মের ধারণা”,
> ড. ইসাম আল-বাশিরের “ধর্ম ও ধার্মিকতা সংরক্ষণে স্থানগত প্রভাব”,
> শাইখ ড. মোস্তফা দাদাশের “সমসাময়িক ফিকহি বিধানসমূহ: অভিবাসন ও বসতি স্থাপনের সাথে সম্পর্কিত”,
> ড. খালিদ হানাফির “ইসলামী ফতোয়া ও ইজতিহাদের পদ্ধতি যা ধর্ম ও ধার্মিকতাকে সংরক্ষণ করে”,
> ড. তাহের মাহদির “সহজ ফতোয়ার তত্ত্ব ও এর ইতিবাচক প্রভাব মুসলমানদের জীবনে”,
> শাইখ মুরাদ সুলেমানভের “ধর্ম ও ধার্মিকতা সংরক্ষণে ইজতিহাদ ও ফতোয়ার পদ্ধতি”।
এই সম্মেলনের বিভিন্ন প্রবন্ধ ও আলোচনার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করা হয়েছে, যা বর্তমান প্রেক্ষাপটে মুসলিম সমাজের উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
| গাজা ও মুসলিম ভাই-বোনদের কষ্টের প্রতি গভীর সমবেদনা :
আমরা গভীর বেদনা ও যন্ত্রণার অনুভব করলাম, যা প্রবীণ আলেমদের হৃদয়ে প্রতিফলিত হচ্ছিল যখন তারা গাজাসহ পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে আমাদের মুসলিম ভাই-বোনদের ভোগান্তির বিষয়ে কথা বলছিলেন। তাদের কথা ছিল দুঃখ ও ক্রোধে পরিপূর্ণ। তারা নিরপরাধ মানুষের ওপর চলমান নির্যাতন ও আক্রমণের কঠিন পরিস্থিতি স্মরণ করছিলেন এবং আল্লাহর কাছে দোয়া করছিলেন, যাতে তিনি তাদের কষ্ট লাঘব করেন এবং তাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে বিজয় দান করেন।
| অত্যাচারী জাতিগুলোর পরিণতি ও আল্লাহর শাস্তি :
তারা তিক্ত স্বরে জিজ্ঞাসা করছিলেন সেই অত্যাচারীদের বিষয়ে, যারা তাদের অবাধ্যতা ও অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে, যেন তারা পূর্ববর্তী জাতিগুলোর পরিণতি থেকে কোনো শিক্ষা নেয়নি। কোথায় নূহের কওম, যাদেরকে মহাপ্লাবনে ডুবিয়ে দেওয়া হয়েছিল? কোথায় ‘আদ জাতি, যাদেরকে প্রচণ্ড ঝড় দিয়ে ধ্বংস করা হয়েছিল? কোথায় সামুদ জাতি, যাদেরকে বজ্রপাতে ধ্বংস করা হয়েছিল, যাদের মধ্যে একজনও বেঁচে ছিল না? এবং কোথায় ফেরাউন ও তার সেনারা, যারা সাগরে ডুবে গিয়েছিল? এবং কোথায় অন্য অত্যাচারী শক্তিমানরা, যারা আল্লাহর শাস্তিতে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে তাদের অহংকারের প্রতিফল হিসেবে?
আল্লাহ তার কুরআনে উল্লেখ করেছেন যে পৃথিবী ও আকাশ অত্যাচারীদের জন্য কাঁদে না যখন তারা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়, কারণ তারা দয়া বা ন্যায়পরায়ণতার যোগ্য ছিল না। তারা পৃথিবীকে ন্যায়বিচার বা সদাচারের মাধ্যমে উন্নত করেনি। এটি তাদের জন্য একটি উপদেশ, যারা হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করে বা মনোযোগ সহকারে শোনে। অত্যাচার চিরস্থায়ী নয়, এবং অহংকারের পরিণতি ধ্বংস ও সর্বনাশ। যত দীর্ঘ সময়ই লাগুক না কেন, যতই তারা আল্লাহর শাস্তি থেকে নিরাপদ মনে করুক, তাদের পরিণতি অনিবার্য। কেউ যদি সন্দেহ করে, তাহলে দেখুক, পশুপাখিরাও তাদের চেয়ে ভালো অবস্থায় রয়েছে।
> “সুখী সেই পাখি, যে ছিটানো শস্য খুঁজে পায়,
কিংবা বন্য প্রাণী, যে তৃণলতা খুঁজে নেয়।”
| রিদ্দা (ধর্মত্যাগ) ও এর মোকাবিলার পথ :
এই সেশনগুলোতে আলোচিত প্রধান বিষয়গুলোর মধ্যে ছিল “রিদ্দা (ধর্মত্যাগ) এর সমস্যা”, যা একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছে। গবেষক ও সমালোচকেরা গভীরভাবে এই বিষয়টি বিশ্লেষণ করেছেন। তারা এর কারণ, প্রভাব, এবং ইসলামি শরিয়াহ থেকে প্রজ্ঞাবহ ও সুনিপুণ পন্থায় কীভাবে এর মোকাবিলা করা যায়, তা নিয়ে আলোচনায় মনোনিবেশ করেছেন।
আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা ইঙ্গিত করেছেন যে, কিছু সন্দেহজনক বই ও উৎস মানুষের মধ্যে ভুল ধারণা ও বিভ্রান্তিকর চিন্তা ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে নেতিবাচক ভূমিকা পালন করছে। বিশেষত, এমন বইগুলো, যেগুলো মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্যসমৃদ্ধ, ইচ্ছাকৃতভাবে সত্য বিকৃত করে এবং ইসলামের সহনশীল শিক্ষার সঠিক চিত্রকে বিকৃত করে। এর ফলে যুবসমাজ বিভ্রান্ত হয় এবং তারা ধর্মীয় নীতিমালা থেকে দূরে সরে যায়। এসব বই কেবল লেখা উপাদান নয়, বরং বিপজ্জনক হাতিয়ার, যা সন্দেহ ছড়াতে এবং দুর্বল চরিত্রের মানুষকে পথভ্রষ্ট করতে ব্যবহৃত হয়।
এক্ষেত্রে অংশগ্রহণকারীরা সংস্কৃতি ও ধর্মীয় সচেতনতা বৃদ্ধি এবং মজবুত শিক্ষা কর্মসূচি প্রণয়নের মাধ্যমে এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন। এসব কর্মসূচি অবশ্যই শক্তিশালী জ্ঞানভিত্তি ও সঠিক তথ্যের উপর ভিত্তি করে গড়ে তুলতে হবে।
আলোচনায় ধর্মীয় ও বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকার গুরুত্ব নিয়েও আলোচনা হয়। তারা জোর দিয়ে বলেন, এসব মিথ্যা ও বিভ্রান্তির বিরুদ্ধে যথাযথ প্রমাণ ও যুক্তি দিয়ে বিজ্ঞানসম্মত জবাব প্রদান করা এবং মনের পাশাপাশি হৃদয়কেও ছুঁতে সক্ষম বিকল্প তথ্য উপস্থাপন করা জরুরি। ইসলামের বার্তা সত্য ও ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত। আর রিদ্দাহ (ধর্মত্যাগ) কোনো কিছু নয়, বরং ইচ্ছাকৃতভাবে এই সত্যকে বিকৃত করার ফল। এজন্য সতর্ক থাকা এবং নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাতে জাতিকে এই বিপদ থেকে রক্ষা করা যায়।
> “বিশ্বকে তাদের স্বপ্ন থেকে দূরে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে,
হে স্বপ্ন-বিচ্ছিন্ন পথিক, স্থির হও।”
গবেষণার উপসংহারে লেখকের বক্তব্য:
মকাসিদ (শরিয়ার লক্ষ্য) জানার তিনটি উপকারিতা রয়েছে। প্রথম দুটি সমস্ত মুসলমানের জন্য প্রযোজ্য, আর তৃতীয়টি বিশেষভাবে ফকীহদের জন্য প্রযোজ্য।
১. প্রথম উপকারিতা:
যদি কোনো ব্যক্তি মকাসিদ সম্পর্কে অবগত হয়, তাহলে সে আল্লাহর প্রজ্ঞা ও দয়ার প্রতি আরও দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করতে পারে এবং নিশ্চিত হতে পারে যে ইসলামের বিধানসমূহ সহজ। হাকীমুল ইসলাম শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভি এই উপকারিতা সম্পর্কে বলেছেন:
> “এটি মুমিনের হৃদয়ে অতিরিক্ত শান্তি ও বিশ্বাস সৃষ্টি করে, যেমন ইবরাহীম (আ.) আল্লাহর কাছে বলেছিলেন, ‘হ্যাঁ, কিন্তু আমার হৃদয় যেন প্রশান্ত হয়।’ কারণ বিভিন্ন প্রমাণের উপস্থিতি এবং জ্ঞানের বহু পথ অন্তরে প্রশান্তি আনে এবং হৃদয়ের উদ্বেগ দূর করে।” (হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ, ১/৩৩)।
২. দ্বিতীয় উপকারিতা:
যদি ব্যক্তি মকাসিদ জানে, তবে সে বিভিন্ন কৌশল ও ছলনার পথ এড়িয়ে চলতে পারে। কারণ এসব ছলনা মকাসিদকে নষ্ট করে দেয়। সে এমন সব কল্যাণ সাধনে মনোনিবেশ করবে, যা শরীয়তের বিধানের উদ্দেশ্য পূরণ করে। শাহ ওয়ালিউল্লাহ আরও বলেন:
> “যদি কোনো ব্যক্তি ইবাদতের প্রকৃত উদ্দেশ্য বুঝে এবং তা সঠিকভাবে পালন করতে চেষ্টা করে, তাহলে সামান্য ইবাদতও তার জন্য উপকারী হবে এবং সে অনিশ্চিত পথ থেকে দূরে থাকবে। এজন্যই ইমাম গাজালি তার সুলুকের বইগুলোতে ইবাদতের রহস্য তুলে ধরেছেন।” (হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগাহ, ১/৩৩)।
৩. তৃতীয় উপকারিতা:
যদি ফকীহ মকাসিদ জানে, তবে এটি তাকে বিধানের কারণ অনুধাবনে সহায়তা করে। এটি তাকে কোনো নির্দিষ্ট বিধান সীমিতভাবে প্রয়োগ করতেও সাহায্য করতে পারে, যা ইসতিহসান (বিচারিক পছন্দ) নামে পরিচিত। এর বিস্তারিত আলোচনার জন্য উসূলুল ফিকহের গ্রন্থগুলো প্রাসঙ্গিক।
উপরোক্ত উপকারিতা স্বীকার করেও লেখক সতর্ক করে বলেছেন যে, মকাসিদকে সর্বজনীন ও স্বাধীন নীতিমালা হিসেবে গ্রহণ করা উচিত নয়। এগুলোকে শরীয়তের বিশদ বিধান থেকে বিচ্ছিন্নভাবে বিবেচনা করলে গুরুতর বুদ্ধিবৃত্তিক ভুলের সৃষ্টি হতে পারে।
> “মকাসিদ শরীয়ত স্বাধীন ও সর্বজনীন নীতি নয়, বরং বিধানগুলো বোঝার একটি সহায়ক মাধ্যম। এগুলোকে চূড়ান্ত সত্য হিসেবে গ্রহণ করলে এটি ভুল পথে নিয়ে যেতে পারে।”
লেখক আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছেন যেন তিনি আমাদের চিন্তা ও ফিকহে সঠিক পথ দেখান এবং ভারসাম্য রক্ষা করার তৌফিক দান করেন।
মানুষের জন্য কর্তব্য হলো শরীয়তের বিস্তারিত বিধান মেনে চলা। ইমাম শাতিবি বলেছেন:
“কোনো কাজ বা কাজ ত্যাগ করার মধ্যে স্বাভাবিকভাবে বুদ্ধি দ্বারা কোনো বিশেষ ভালো বা খারাপ থাকা সম্ভব নয়। কিন্তু যখন শরীয়ত কোনো একটি কাজকে কল্যাণের জন্য নির্ধারণ করে এবং অন্যটিকে ক্ষতির জন্য নিষিদ্ধ করে, তখন এটি পরিষ্কার করে দেয় যে কোন দিক থেকে কল্যাণ আসবে এবং সে জন্য নির্দেশ প্রদান করেছে অথবা অনুমতি দিয়েছে। আবার যেখান থেকে ক্ষতি হবে, সেই পথ নিষিদ্ধ করেছে, যা আল্লাহর বান্দাদের প্রতি দয়া।
তিনি আরও বলেন, “যদি কোনো ব্যক্তি শরীয়তের নির্দেশিত মঙ্গলকে তার উদ্দেশ্য হিসেবে গ্রহণ করে, তবে সে কল্যাণের সর্বোত্তম পথে চলবে। আর যদি কেউ শরীয়তের বিপরীত কিছু উদ্দেশ্য গ্রহণ করে, তবে তা সাধারণত ভুল ধারণার ফল। কারণ সচেতন মানুষ সরাসরি ক্ষতির উদ্দেশ্য গ্রহণ করে না। এতে সে যা উপেক্ষা করার কথা, তা গুরুত্ব দিয়েছে এবং যা গুরুত্ব দেওয়ার কথা, তা উপেক্ষা করেছে। এটি স্পষ্টতই শরীয়তের বিপরীত।”
| ইমাম শাতিবি আরও বলেছেন :
“মঙ্গল বা অমঙ্গল নির্ধারণ করা শরীয়তের একান্ত কাজ। কারণ বুদ্ধি দ্বারা কোনো জিনিস স্বাভাবিকভাবে ভালো বা মন্দ বলা যায় না। যদি শরীয়ত কোনো বিধান কল্যাণের জন্য নির্ধারণ করে, তবে তা মঙ্গল হয়ে ওঠে। না হলে তা মঙ্গল হতো না। কারণ সমস্ত বিষয় শুরুতে সমান ছিল। বুদ্ধি দ্বারা ভালো বা মন্দ নির্ধারণ সম্ভব নয়। মঙ্গলের প্রকৃতি যা-ই হোক, তা শরীয়তের নির্দেশে নির্ধারিত এবং তা আত্মাকে শান্তি প্রদান করে। অতএব, মঙ্গলের বিষয়টি মূলত ইবাদতের মধ্যে নিহিত। যা ইবাদতের উপর নির্ভর করে, তা ইবাদত হিসেবেই থাকবে।”
| লেখকের মন্তব্য:
ইমাম শাতিবি ‘তাহসীন ও তাকবীহ’ (ভালো-মন্দ নির্ধারণ) বিষয়ে আশআরিদের পথ অনুসরণ করেছেন। গাজালি ও অন্যান্য আশআরি ইমামরাও একই পথ অনুসরণ করেছেন। তবে আমি (লেখক) তাদের সাথে সম্পূর্ণ একমত নই। আমি এখানে শাতিবির বক্তব্য উদ্ধৃত করেছি, যাতে মানুষ বুঝতে পারে যে যখন ভালো-মন্দ নির্ধারণ সম্পূর্ণভাবে শরীয়তের উপর নির্ভরশীল, তখন কীভাবে এটি বুদ্ধিভিত্তিক প্রক্রিয়া হিসেবে ব্যাখ্যা করা যায়? এটি একটি নতুন পদ্ধতি যা শরীয়তের মূলনীতি থেকে প্রস্থান ঘটায়। শাতিবি একা নন, ইমাম গাজালি ও অন্যান্য আশআরি ইমামরাও এ বিষয়ে অবদান রেখেছেন।