AkramNadwi

আল্লাহর শাস্তি ও তাঁর নিদর্শনসমূহ। ❞

https://t.me/DrAkramNadwi/1929

بسم الله الرحمن الرحيم.


————–

লোকেরা বলল: কাদের ওপর আল্লাহ তাঁর শাস্তি দেন? এবং কবে সেই শাস্তি আসে?

আমি বললাম: আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিনে কাফির, মুশরিক ও মুনাফিকদের জন্য জাহান্নামে নানা প্রকার শাস্তির ব্যবস্থা রেখেছেন, যেখানে তারা চিরকাল থাকবে। আর মুসলিম ও মুমিনদের মধ্যে যারা গুনাহ করে, আল্লাহ তাঁদেরও জাহান্নামে প্রবেশ করাতে পারেন, তবে তারা সেখানে চিরকাল থাকবে না। এছাড়াও, সকল মানুষকেই কবরে পরীক্ষা ও শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়।

তারা বলল: এই দুনিয়ায় আল্লাহর শাস্তির পদ্ধতি কীভাবে হয়?
আমি বললাম: দুনিয়াতে আল্লাহর শাস্তি দুই প্রকার।

প্রথম প্রকার হলো—সেসব কাফিরদের শাস্তি, যাদের কাছে আল্লাহ তাঁর রাসুলদের পাঠান এবং যাদের ওপর আল্লাহর দলিল সম্পূর্ণভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। এরপর আল্লাহ তাঁর রাসুল ও তাদের অনুসারীদের হিজরত করার নির্দেশ দেন, তারপর কাফিরদের ওপর শাস্তি নেমে আসে—তাদের ধ্বংস করে দেয়, মূলোৎপাটন করে দেয়, যেমনটা ঘটেছিল নূহ (আঃ), আদ, সামূদ ও লূতের কওমের ক্ষেত্রে। এটাই সেই শাস্তি যার কথা আল্লাহ বলেছেন—
“আর আমি কখনোই কাউকে শাস্তি দিই না যতক্ষণ না একজন রাসুল প্রেরণ করি।”
এবং বলেছেন—
“আল্লাহ তাদের শাস্তি দিতেন না, যখন আপনি (হে নবী) তাদের মাঝে আছেন; এবং আল্লাহ তাদের শাস্তি দিতেন না, যখন তারা ইস্তেগফার করছিল।”
এই আয়াতের “তারা ইস্তেগফার করছিল” অংশ থেকে বোঝা যায় যে, এই প্রকার শাস্তি কখনোই সৎ ও সংশোধনকারীদের ওপর আসে না। যেমন আল্লাহ বলেন—
“আপনার প্রতিপালক এমন নন যে, কোনো জনপদকে জুলুম করে ধ্বংস করবেন, অথচ সেখানকার লোকেরা সংশোধনকারী।”

তারা বলল: দ্বিতীয় প্রকার শাস্তি কী?
আমি বললাম: এটি হলো—সেসব অত্যাচারী, দাম্ভিক ও দুনিয়ায় অশান্তি সৃষ্টিকারীদের ওপর আল্লাহর ক্রোধ, যখন তাদের অনাচার চরম সীমায় পৌঁছে যায়। এই ধরণের শাস্তির জন্য রাসুল পাঠানো শর্ত নয়। যেমন ঘটেছিল হাতির বাহিনীর সঙ্গে, যখন তারা সীমালঙ্ঘন করেছিল এবং দুনিয়ায় দাঙ্গা সৃষ্টি করেছিল। এই শাস্তি অনেক সময় আল্লাহর কোনো বান্দার হাত দিয়েই সংঘটিত হয়। যেমন আল্লাহ বলেন—
“যখন প্রথম প্রতিশ্রুতির সময় এলো, তখন আমি পাঠালাম তোমাদের ওপর আমার কিছু শক্তিশালী বান্দাকে, তারা তোমাদের ঘরবাড়িতে প্রবেশ করল। এটি ছিল একটি সম্পূর্ণ হওয়া প্রতিশ্রুতি।”
এই ধরণের শাস্তির পূর্বে হিজরতের দরকার হয় না। এতে মুসলিমরাও কাফিরদের সঙ্গে ধ্বংস হয়ে যায়, কিন্তু কিয়ামতের দিনে সবাই নিজ নিজ নিয়তের ওপর পুনরুত্থিত হবে।

এই কথাটিই এসেছে হাদিসে আয়িশা (রা.) থেকে, যা সহিহ হাদিসে আছে।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন: “একটি সেনাবাহিনী কাবা আক্রমণের জন্য এগিয়ে যাবে। তারা যখন মক্কার কাছে একটি খোলা মাঠে পৌঁছাবে, তখন তাদের প্রথম ব্যক্তি থেকে শেষ ব্যক্তি পর্যন্ত সবাইকে ভূমিকম্প গিলে ফেলবে।”
আয়িশা (রা.) বললেন: “হে আল্লাহর রাসুল! তাদের সবাইকে ধ্বংস করা হবে, অথচ তাদের মধ্যে তো এমনও থাকবে যারা সেখানে শুধু বাজারে গিয়েছিল বা কারো সঙ্গে ছিল না।”
তিনি বললেন: “হ্যাঁ, সবার সঙ্গেই তা ঘটবে। তবে কিয়ামতের দিনে সবাইকে তাদের নিজ নিজ নিয়তের ভিত্তিতে পুনরুত্থিত করা হবে।”

এই ধরনের শাস্তি হচ্ছে আল্লাহর এক ধরনের প্রতিশোধ, যেখানে কাফির ও মুসলিম—সব ধরনের দম্ভকারী লোক সমভাবে শামিল হয়। এর মাধ্যমেই ইতিহাসে বহু মুসলিম জাতিকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। ইরাক, মিশর ও লিবিয়ায় যা ঘটেছে, তা তো আমাদের কাছ থেকে কিছু দূরের ঘটনা নয়।

আল্লাহ যে সীমারেখাগুলো কুরআনে বা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মাধ্যমে নির্ধারণ করেছেন, সেগুলোও এই শাস্তির অন্তর্ভুক্ত। তাই বলা হয়েছে—
“তাদের শাস্তি দেখার জন্য মুমিনদের একটি দল যেন উপস্থিত থাকে।”
তবে এ ধরণের সীমারেখা (হুদুদ) যদি আন্তরিক তাওবার সাথে আসে, তবে তা গুনাহ মোচনের কারণ হয়ে যায়।

তারা বলল: পৃথিবীর নানা অঞ্চলে যে ভূমিকম্প, বন্যা, ঝড়-বৃষ্টি হয়, এসব কীভাবে ব্যাখ্যা করব? এসব তো আমাদের পক্ষে বোঝা কঠিন। কেউ কেউ এগুলোকে ‘আদ’ ও ‘সামূদের’ কওমের মত শাস্তি বলে মনে করে, আবার কেউ কেউ, যারা অন্ধ ও বধির, তারা এগুলোকে সাধারণ ঘটনা মনে করে—না এতে শিক্ষা নেয়, না চিন্তা করে; বরং গাফেলতায় ডুবে থাকে, ভোগবিলাসে মত্ত থাকে, গুনাহ প্রকাশ্যে করে, আর নিজের কুৎসিত জীবনের জন্য মোটেও অনুতপ্ত হয় না।

আমি বললাম: এগুলো হচ্ছে আল্লাহর পাঠানো নিদর্শন। তিনি এগুলো পাঠান মানুষকে স্মরণ করিয়ে দিতে—তাঁর অপ্রতিরোধ্য ক্ষমতা ও অদৃশ্য সৈন্যবাহিনীর কথা, যাদের মোকাবিলা করার শক্তি মানুষের নেই।

এগুলো মানুষকে জাগিয়ে তোলার, সতর্ক করার, থামিয়ে দেওয়ার একপ্রকার দয়াপূর্ণ পদ্ধতি—
যাতে কাফির ও মুশরিকরা তাদের কুফরি ও শিরক থেকে তাওবাহ করে, আর মুসলিম গুনাহগাররা তাদের পাপ ও অহংকার ত্যাগ করে, ভোগবিলাস বাদ দেয়।

আল্লাহ বলেন:
“নয়টি নিদর্শন নিয়ে আমি পাঠিয়েছিলাম ফিরআউন ও তার কওমের কাছে।”
আরও বলেন:
“তাদের ওপর আমি প্রেরণ করেছিলাম প্লাবন, পঙ্গপাল, উকুন, ব্যাঙ ও রক্ত—একটি একটি করে সুস্পষ্ট নিদর্শন।”
এর মধ্যে ছিল তূর পাহাড় উত্তোলন করে বনী ইসরাঈলের সামনে তুলে ধরা—
“আর যখন আমি তোমাদের কাছ থেকে অঙ্গীকার নিয়েছিলাম এবং তোমাদের ওপর তূর পাহাড় তুলে ধরেছিলাম: ‘যা আমি তোমাদের দিয়েছি, দৃঢ়ভাবে গ্রহণ করো, আর যা তাতে আছে তা স্মরণে রাখো, যাতে তোমরা তাকওয়াবান হতে পারো।’”
তেমনি সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণও একটি নিদর্শন। এ কারণে রাসুলুল্লাহ (সা.) এসব ঘটলে নামাজে ঝুঁকে পড়তেন।

তারা বলল: আগুন, ভূমিকম্প, প্রাকৃতিক কম্পন, প্রবল স্রোত ও ঘূর্ণিঝড়—এসব তো প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এদের বৈজ্ঞানিক কারণ আছে, উপকার ও অপকার দুই-ই আছে। অনেক কিছু তো পৃথিবীর গঠনের সঙ্গেও সম্পর্কযুক্ত—
যেমন: ভূমিকম্প হয় টেকটনিক প্লেট সরার কারণে, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত কিছু দেশের জন্য সম্পদ হয়ে দাঁড়ায়, কারণ আগ্নেয়গিরির মাটিতে কফি চাষ ভালো হয়। আবার জলবায়ু ও আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণেও কিছু দুর্যোগ ঘটে, যেমন দাবানল, বন্যা ও ঝড়।

এসব তো প্রকৃতির নিয়ম—আপনি কীভাবে এগুলোকে আল্লাহর পক্ষ থেকে পাঠানো ভয়ানক সতর্কবার্তা বলছেন?

আমি বললাম: প্রকৃতির সবকিছুই আল্লাহর সৃষ্ট ও আদেশাধীন। তিনি এগুলো সৃষ্টি করেছেন নির্দিষ্ট সময়সীমা ও পরিসীমার সঙ্গে, নির্দিষ্ট কারণ ও পরিণামসহ।

একটি ঘটনার পেছনে একাধিক কারণ থাকতে পারে—প্রাকৃতিক ও অপ্রাকৃতিক, বাহ্যিক ও গোপন।

যেমন ভূমিকম্প—তার একটা জানা বৈজ্ঞানিক কারণ আছে, কিন্তু তাতে এটাও অস্বীকার করা যায় না যে, এর আরেকটা ধর্মীয় ও নৈতিক কারণও থাকতে পারে। এমনকি গোপনে বহু অজানা কারণও থাকতে পারে।

তারা বলল: ধরুন, নির্দিষ্ট সময়ে ও নির্দিষ্ট স্থানে কোনো ভূমিকম্প হয়, যার স্পষ্ট একটা বৈজ্ঞানিক কারণ আছে। তাহলে কিভাবে বলা যায়—ঠিক তখনই ঐ অঞ্চলের মানুষের গুনাহ বা বিপদগ্রস্ততা ছিল, আর আল্লাহ সেজন্যই তা পাঠালেন?

আমি বললাম: আল্লাহ তাআলা সেই প্রাকৃতিক কারণের গতিকে এমনভাবে নির্ধারণ করেন, যেন তা ঐ সময়ে ও ঐ স্থানে মানুষের অনাচারের সঙ্গে মিলে যায়।

তাঁর ক্ষমতা আমাদের জানা-অজানার সব কিছুকে অন্তর্ভুক্ত করে, তাঁর মহিমা থেকে কিছুই বিচ্ছিন্ন নয়।
তাঁর বিধান অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত—সবকিছুর ওপর কার্যকর। তাঁর ফয়সালায় রয়েছে এক প্রকাশ্য দিক এবং এক গোপন দিক।
তাঁর জ্ঞানের গভীরতা এমন যে, সৃষ্টির জ্ঞান তার গভীরে পৌঁছাতে অক্ষম।

কোনো কিছুই তাঁর জ্ঞানের অন্তরালে নেই।
সব গোপনীয়তার পূর্ণ জ্ঞান শুধু তাঁরই কাছে—তিনি যেটা প্রকাশ করতে চান, সেটাই প্রকাশ হয়।

ধ্বংসযজ্ঞের প্রতিটি বিপর্যয়ের মধ্যেই কিছু উপকার ও অপকার নিহিত থাকে, যেগুলো আল্লাহ তা‘আলা তাঁর জ্ঞান ও হিকমতের দ্বারা নির্ধারণ করেন। এই বিপর্যয়গুলো যেমন কসমিক (বিশ্বজনীন) কল্যাণের জন্য নিয়োজিত, তেমনি সেগুলো আল্লাহর অসাধারণ ক্ষমতার স্পষ্ট নিদর্শনও। যেমন, বৃষ্টি এক সম্প্রদায়ের জন্য উপকারী হলেও অন্যদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। কোনো একটি খাবার বা পানীয় কিছু লোকের জন্য উপযুক্ত, আবার অন্যদের জন্য অযোগ্য বা ক্ষতিকর হতে পারে। আল্লাহ যা কিছু সৃষ্টি করেছেন, প্রতিটির মধ্যেই কিছু উপকার এবং কিছু অপকার রয়েছে। তাই আমাদের শেখানো হয়েছে—“বলুন, আমি আশ্রয় চাই সৃষ্টিকর্তার কাছে, তাঁর সৃষ্টি করা সব কিছুর অনিষ্ট থেকে।”

তারা বলল: আমরা কি এই ধ্বংস ও বিপর্যয়গুলোকে আল্লাহর অসন্তোষ ও ক্রোধ হিসেবে বিবেচনা করতে পারি?
আমি বললাম: হ্যাঁ, পারো।
তারা বলল: কিন্তু যখন আমরা বলি, এটা আল্লাহর ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ, তখন সেক্যুলাররা ও তাদের অনুসারীরা আমাদের নিয়ে হাসাহাসি করে, ঠাট্টা করে। তারা বলে, এগুলো তো সাধারণ কারণের ফলাফল, যা আমরা বিজ্ঞান দিয়ে ব্যাখ্যা করতে পারি।
আমি বললাম: এটা তাদের অজ্ঞতা, কারণ তারা এই জগৎ ও সৃষ্টির গোপন ও অন্তর্নিহিত রহস্যগুলো জানে না। যেমন আমি আগেই বলেছি, এইসব ঘটনা প্রাকৃতিক কারণ দ্বারা সংঘটিত হলেও একই সঙ্গে এগুলোর পেছনে সৃষ্টিকর্তার অন্য রহস্যময় ও লুকানো উদ্দেশ্যও থাকে। তাই এ দুটি ব্যাখ্যার মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। বরং যারা এসব লুকানো ও সৃষ্টিকর্তাজনিত কারণ অস্বীকার করে, তারাই প্রকৃত অজ্ঞ ও বোকার দল। আর এই সেক্যুলাররা লজ্জাও পায় না “প্রকৃতির রোষে” ধ্বংস হয়েছে বলে বলতে!
তবে আল্লাহর ক্রোধের পরিবর্তে “প্রকৃতির রাগ” বললে সেটা নাকি বিজ্ঞানের কথা! আর আল্লাহর ক্রোধ বললে সেটা নাকি অজ্ঞতা! এটা কত বড় বোকামি, কত বড় পথভ্রষ্টতা ও বিভ্রান্তি!

তারা বলল: এসব বিপর্যয়ে যদি কোনো সম্প্রদায় একেবারে ধ্বংস হয়ে যায়, তাহলে তারা কিভাবে এসব থেকে শিক্ষা নেবে?

আমি বললাম: এই বিপর্যয়গুলো আসলে যারা বেঁচে থাকে, তাদের জন্য সতর্কবার্তা; আর যারা ধ্বংস হয়, যদি তারা কাফির বা পাপী হয়, তবে তাদের জন্য তা শাস্তি।
তারা বলল: আর যদি কোনো নেককার, ভালো মুসলিম এতে মৃত্যুবরণ করে?
আমি বললাম: তাহলে সে শহীদের সাওয়াব লাভ করে।
তারা বলল: আর যদি কোনো মুসলিম এসব বিপর্যয়ে তার সম্পদ হারায়, শরীর বা পরিবারে ক্ষতিগ্রস্ত হয়—তখন কি সে সওয়াব পায়?
আমি বললাম: হ্যাঁ, যদি সে ধৈর্য ধারণ করে এবং আল্লাহ ছাড়া কারো কাছে অভিযোগ না করে, বরং আল্লাহর দয়া কামনা করে, তাঁর সাহায্য চায়, এবং তাঁর দিকে ফিরে আসে—তাহলে যে বিপদই আসে না কেন, তা দ্বারা আল্লাহ তার গুনাহ মাফ করেন এবং তার মর্যাদা বাড়িয়ে দেন।

তারা বলল: আমাদের নিজেদের মধ্যেই তো অনেক নিদর্শন রয়েছে, আর কুরআনেও তো অনেক নিদর্শন আছে। গোটা বিশ্বজগৎই তো তাঁর নিদর্শনে পরিপূর্ণ। তাহলে আমাদের কেন এমন ভয়াবহ, ধ্বংসাত্মক নিদর্শনের প্রয়োজন পড়ে?
আমি বললাম: তোমরা ভালো প্রশ্ন করেছো। নিশ্চয়ই আল্লাহ যা কিছু সৃষ্টি করেছেন, আর যা কিছু তিনি অবতীর্ণ করেছেন, সবই তাঁর কুদরতের, জ্ঞানের, রহমতের এবং তাঁর একত্ববাদের নিদর্শন। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ এসব নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করে না, তাদের হৃদয় অমনোযোগী ও উদাসীন। তারা এসব নিদর্শনের প্রতি মনোযোগ দেয় না, বরং দুনিয়ার মোহে ডুবে থাকে। তারা যত বিপদই আসুক, শিক্ষা গ্রহণ করে না।
তাই আল্লাহ তাদের প্রতি দয়া করে, এমন সতর্ককারী নিদর্শন পাঠান, যেন তারা সজাগ হয় এবং ফিরে আসে।
আল্লাহ বলেন:
“এগুলো আমি মানুষের জন্য উপমা দেই, কিন্তু তা কেবল জ্ঞানী ব্যক্তিরাই বোঝে।”
আরও বলেন:
“আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীতে অনেক নিদর্শন রয়েছে, তারা সেগুলোর পাশ দিয়ে যায়, অথচ তারা সেদিকে মনোযোগই দেয় না। তাদের অধিকাংশই আল্লাহতে বিশ্বাস করে, কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে শিরকও করে। তারা কি নিশ্চিন্ত যে, আল্লাহর শাস্তির কোনো গজব এসে তাদের গ্রাস করবে না? অথবা হঠাৎ কিয়ামত এসে যাবে, আর তারা টেরই পাবে না?”

————-

✍ মূল : ড. আকরাম নদভী, অক্সফোর্ড, ইউকে।
✍ অনুবাদ যাচাই ও সম্পাদনা : মাওলানা মারজান আহমদ, সিলেট, বাংলাদেশ।

শেয়ার করুন:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *