بسم الله الرحمن الرحيم
❝
:: লেখক: ড. মুহাম্মদ আকরাম নাদভী,
অক্সফোর্ড।
অনুবাদ যাচাই ও সম্পাদনা :
মাওলানা মারজান আহমদ, সিলেট, বাংলাদেশ।
প্রশ্ন:
আমার প্রিয় ছাত্র মাওলানা মুহাম্মদ মাসউদ নাদভী আমার যোগ্য ছাত্রদের মধ্যে অন্যতম। তিনি একজন ভদ্র, সৎ এবং অনুগত ব্যক্তি। এক বছর পর্যন্ত তিনি নাদওয়াতে আমার তত্ত্বাবধানে ছিলেন। শিক্ষা সমাপ্ত করার পর তিনি তাঁর শহর রামপুরে একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে জীবনযাপন করছেন। তিনি প্রশ্ন করেছেন:
“আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ।
❓আমার প্রশ্ন হলো বর্তমান যুগে যে অনলাইন ট্রেডিং চলছে, তা শরিয়তের দৃষ্টিতে কীভাবে দেখা হয় ?”
✅ উত্তর:
অনলাইন লেনদেন আমাদের জীবনের অংশ হয়ে গেছে; পণ্য ক্রয়-বিক্রয়, বিমান ও ট্রেনের টিকিট বুকিং, ভিসা গ্রহণ, হজ ও উমরার অনুমতি, যাকাত ও দানের প্রদান, অর্থ স্থানান্তর, হোটেল এবং পর্যটন স্থানের রিজার্ভেশন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি — এই সব কাজ অনলাইনে সম্পন্ন হচ্ছে। অনলাইন বাণিজ্যের বৈধতার শর্তগুলো ঐতিহ্যবাহী বাণিজ্যের বৈধতার শর্তের মতোই। কুরআনে বলা হয়েছে, “আল্লাহ ব্যবসাকে বৈধ করেছেন” (সূরা বাকারা, আয়াত ২৭৫) এবং “হে ঈমানদারগণ! তোমরা পরস্পরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না, তবে তোমাদের মধ্যে পরস্পরের সম্মতিক্রমে বাণিজ্য হওয়া উচিত” (সূরা নিসা, আয়াত ২৯)।
যেমনটি ঐতিহ্যবাহী ব্যবসায়ে রয়েছে, এখানে কোনো হারাম লেনদেন থাকা উচিত নয়; অর্থাৎ হারাম জিনিসের ব্যবসা, সুদি ঋণ, জুয়া, প্রতারণা এবং ঠকানো থেকে বিরত থাকা।
‘ঘরর'(غرر ) অর্থাৎ ধোকা বা অনিশ্চিত পরিস্থিতি থেকেও পরিহার করতে হবে। ‘غرر এর বিস্তারিত ব্যাখ্যা হলো:
1. যে জিনিসটি ক্রয় করা হচ্ছে, তার সেই গুণাবলি লিখিত আকারে থাকা উচিত, যা তার মূল্যে প্রভাব ফেলে।
2. বিক্রেতার কাছে সেই পণ্যগুলো থাকতে হবে, অথবা বাজারে এমন পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকা উচিত যেন বিক্রেতা সহজেই তা সংগ্রহ করতে পারেন।
3. পণ্যের মূল্য লিখিত আকারে থাকা উচিত, এবং ক্রেতার কাছে কীভাবে পৌঁছানো হবে, তাও লিখিতভাবে সম্মতি থাকতে হবে।
4. পণ্য ও মূল্য বিনিময়ের সময় ও পদ্ধতি সুনির্দিষ্টভাবে জানা থাকা উচিত।
5. ক্রেতা ও বিক্রেতা বা প্রতিষ্ঠানগুলোর পূর্ণ পরিচয় সরবরাহ করতে হবে।
যে সমস্ত লেনদেনের ক্ষেত্রে কোনো বিরোধ হলে উভয় পক্ষই আদালতে প্রমাণ উপস্থাপন করতে সক্ষম, সেই লেনদেনগুলো অনলাইনে করা ভালো। আল্লাহ তাআলার বাণী, “যখন তোমরা ব্যবসা করো, সাক্ষী রাখো” (সূরা বাকারা, আয়াত ২৮২) এ দিকেই ইঙ্গিত করে।